বাংলা ভাষায় রচিত রোমন্টিক পদ্যে বিরহ একটি বিশেষ স্থান দখল করে রেখেছে। নারী-পুরুষ নিয়ে এই বিশ্বচরাচর অনাদিকাল হতে চলছে। তাই, নরনারীর সম্পর্ক বিবর্জিত সাহিত্য কল্পনা করা প্রায় অসম্ভব বলা চলে। কেননা, সাহিত্য মানব জীবনেনরই প্রতিচ্ছবি।.
বিরহকে কেন্দ্র করে লিখেছেন কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ প্রমুখ। ভাষায় ও ছন্দে বিভিন্ন ভাবে তাঁরা নিয়ে এসেছেন মনের গভীরে প্রোথিত অনুভূতিকে।
অধিকাংশ বাঙালি কবিই সম্ভবত এক বা একাধিকবার প্রেমে পতন বা বিরহে কাতর হয়েছেন।রবীন্দ্রনাথ এর কথাই ধরা যাকনা কেন...প্রথম জীবনে কাদম্বরী দেবীর বিরহে কাতর না হলে হয়তো তিনি এতো সৃষ্টিশীল প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে কবিগুরু হয়ে উঠতেননা। আমার কথা কেন জানি বিশ্বাস করতে ইচ্ছা কছেনা, তাইনা? আগ্রহ থাকলে পত্রভারতীতে রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় -এর এ বিষয়ে সাক্ষাৎকারটি দেখুন।
কিংবা জীবনানন্দ দাস তার কবিতা "বনলতা সেন" এ যেভাবে বিরহের্ নিঃসঙ্গতা দেখিয়েছেন তা বাংলা সাহিত্যে অতুলনীয়। আসলে জীবনানন্দ দাশের কবিতা প্রথম জনপ্রিয় হয় তার 'বনলতা সেন” কাব্য-গ্রন্থটি প্রকাশিত হবার পর। তার আগে তার একাধিক বই বেরিয়েছিল, প্রেমের কবিতাও লিখেছেন যথেষ্ট । কিন্তু বনলতা সেন এক অভিনব স্বাদ নিয়ে এলো ৷ ইতিহাস-মহ্তুন-করা এক নারীর কাছে কবি চেয়েছিলেন মাত্র দু'দণ্ডের শান্তি।
বৈষ্ণব কবিতার ধারা ধরে রবীন্দ্র প্রণয়-গীথার যে সুর, তার আমূল পরিবর্তন হয় তিরিশের দশকে । আর বনলতা সেন কবিতাটিকেই ধরতে হয় এ দিক-বদলের চিহ্ন হিসেবে । এ প্রসঙ্গে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় -এর হৃদয় ছোয়া আবৃত্তি টি না উল্লেখ করেই পারছিনা।
সুচেতনা, নয় তোমার কাছে কিছুই অজানা
হয়ত তোমার জন্য
বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যায় , হোটেলের জানালায়
এলোমেলো দমকা হাওয়ায় অবিন্যত্ত চুল-
কিছু জানা কিছু অজানায় , কিছু নিষিদ্ধ তাড়নায়
আকাঙ্খিত পরিণতি(না?) জীবনের বৃহত্তম ভুল
বৈপ্লবিক সেই রাত্রির শেষে , কোঁচকানো বিছানার ক্যানভাসে
দুজনের সাথে চলার বুক ভরা আমন্ত্রণ -
পর্দা ঢাকা জানালায় আর হোটেলের দরজায়
ওৎ পেতে অসঃধ্য সম্মীকরণ
তোমার হৃদয়ের পাতায় আমার কবিতায়
সমস্ত সুলিখিত আগাম বার্তায়-
কোথাও ছিলো না তো হ্যায় ! পরিণতির কালো ছাই -----
নিয়তির ইচ্ছা সত্যি রোঝা দায় !
যা হওয়ার ছিলো হয়নি , যেভারে হওয়ার ছিলো তাও হয়নি
দুজনেই সরে গেছি আজ বহু দূরে;
শেষের পরেও একটি শুরু থাকে, আর সেটাও আমাদেরই হাতে
পারি নাকি আবার আসতে ফিরে?
আমার স্বপ্নের নায়িকা
আজ হয়েছে নষ্টা
বেশ তো ছিলাম সর ভুলে ,
হঠাৎ করে স্বপ্নে এলে -
আজকের সবচেয়ে বড় সমস্য !
যতছিন ছিলাম সাথে দুজনাতে
সেন্ট্রাল পার্ক, নলবন, কিংবা ভিক্টোরিয়া -
দুজনের সমস্ত গোপন অভিসারে
বকে গেছি ঘন্টার পর ঘন্টা জুড়ে
তোমার ঠোঁট জুড়ে সতীত্ব আর আমার উঠতো ধোঁয়া ৷
তোমার বুকের উদ্ধত উষ্ণতায়
জ্বলতে চেয়েছি কতবার
মনের গোপন ইচ্ছেরা সব
লাশকাটা ঘরে নীরব, নিথর !
দাওনি অধিকার বিদায় বেলায় হাত টুকু ধরার !
তবুও তুমি-ই আমার স্বপ্নের নায়িকা ৷
গেছো চলে একলা ফেলে
হয়ত তোমার যোগ্য ছিলাম না আমি
কিন্তু পুরুষ ছিনাম , নেডাতে পারতাম প্রজ্জলিত বহ্নি !
কোনোদিনও কি একটা সুযোগও দিলে ?
শপিং মলে যাওয়ার আর রেস্তোরাঁয় খাওয়ার বিনিময়ে
অঙ্গ বস্ত্র একে একে গেছো খুলে --
আজ লোকে তোমায় ভাবে বাথরুমই
তোম্রার শরীরী বর্ণনা রাস্তার গুঞ্জনে
শরীর ও সন্মানটুকু বিকিয়ে কী পেলে?
যে পথে চলেছি আমরা
সেটা কোথাও যায়না ৷
আমি তুমি ছেড়ে কেন মোরা , আমরা
তার কোনো জবাব হয়না
নিয়ম ভাঙ্গার এই খেলায়
নিয়ম বলেই তো কিছু নেই ,
আর কয়েকটা অব্যক্ত ইচ্ছের অপমৃত্যু ৷
ইচ্ছেগুলো গুমরে গুমরে কাঁদে, নিস্তব্ধ নিভৃত রাতে
তোমার সতীত্বের বদ্ধ আবরণে।
ভালোবাসা কিছু নয় , ভালোলাগাটাই সব --
তারই একটু চাই সুধু তব নয়নকোণে ৷
আমি ভালো আছি , বেশ ভালো আছি
সবাই যাও দেখে আমি খুব ডালো আছি ।
নিদ্রাতুর চোখে কোন কালে ভোরের আলো
আজ আর দেখিনা মিছি মিছি।
আর নেই আরব্য রজনীর দেশে গিয়েও উদাসী নয়ন
মনের কোণে কোনো এক বঙ্গললনার কপট অভিমান
শ্রীমতী থাক আর যাক , আজ খুশি শ্রীমান।
অতীতের অন্ধকার গর্ভেই তো জন্মায়
ভবিষ্যত আলোর দিশা ।
বিয়ের আগের আমার `বউ`টা
আজ শুধুই কেন দূরাশা ।
কত কোকিল ডাকা ভোরে, আলসে চোখে
সহস্র রঙিন পরিকল্পনা ।
মেলেছি দুজনে ডানা ।
আজো রয়ে গেছে ভাঙ্গাচোরা স্মৃতিতে;
নীড়ে ফেরা পাখির কলরবে, আর্দ্র আঁখি পল্লবে
আর ফেলে আসা পথের যতিতে।
“দারিদ্র যবে দুয়ারে আসি দাড়ায়, প্রেম তবে গবাক্ষ পথে পালায়”
এই তো ছিল অমিমাংশিত সমীকরণ ;
পর্যাপ্ত পার্থিব প্রাচুর্য্যের প্রয়াস ছিল না --- দিলেম স্বীকৃতি
বুকে ছিল বল , ভালবাসার আশ্রয়স্থল
চেয়েছি কি এমন নিষ্কৃতি !
সবাই যেদিন শুরু করে মোদের হল শেষ ;
রইল শুধু তপ্ত অশুজল ,
বিদায়ী শীতের কিছু অনাদায়ী উত্তাপের রেশ।
মৃত্যুপূর্বের একফোঁটা গঙ্গাজল।।
চারিদিকে ভাষা ভাষা চাহুনি
অবিশ্বাসে ভরা দৃষ্টি ,
প্রতি মুহূর্তে বিষছে ; রক্তাক্ত হৃদয়
একি অনাসৃষ্টি !
চওড়া হাসির আড়ালে লুক্কায়িত
বিষাক্ত শূদন্ত !
হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়বে
নীল শরীরে মুক্তি দুরাগত ।
অসহায় যন্ত্রনায় যার বুকে রেখেছে মাথা
ব্যক্ত হয়েছে অব্যক্ত দু:খ গাথা
ক্রুর হাসি অন্তরে তার , বাহিরে নিস্পাপ আর্দ্রতা.
তৃষ্ণার্ত চোখের অধরা মরিচিকা ।
বিদায়ের বেলায় অস্তরাগের. খেলায়
চোখের কোনে একান্ত গোপনে
তোমার আসা-যাওয়া...
সাথীহারা বিস্তৃত মুহূর্তে, যোজনবাপী দূরত্তে
শূন্য-এ বুকে আজও ঢেউ ওঠে,
হয়ত বলবে বেহায়া
জীবন নাট্যের শেষ অংকে দেহ মন অঙ্গ প্রত্যঙ্গে
রচিত সহস্র কবিতা নাকি প্রেমের ব্যর্থতা
রক্তের রং মেশে ওড়নায়।
পথ: যে অপসারী চলেছি দূরে দূরে সরি
অপ্রতিরোধ্য দূর্বারগতি পিছনে তাকালেই ক্ষতি
যদি বারেক ফিরে তাকাই!
আজো. আগে বসন্ত, অপেক্ষায় পলাশের বন
হয়েগেছে. একাকার কিংশুক... সূর্যাস্ত আর বুকচেরা রক্ত;
আলোকবর্ষ দূরে থেকেও হৃদে আছো আমরণ
মিশে গেছি আজ জনতায় খোঁজাটাই শক্ত ।
আজ আমি শুষ্ক পুষ্প এক
কেও ফিরে তাকাবেনা বারেক;
তবু হয়নি ব্যর্থ মোর জীবন
করিয়েছি চার চক্ষুৰ মিলন
হিয়ায় হিয় রাখি হাতে রাখি হাত,
চলার পথে প্রেরণা দিয়াছি কাছে দুরে যেখানেই থাক।
হয়তো শুষ্ক গোলাপ বইয়ের ভেতর পরে
প্রেমিকার হাতে তুলে দিতে হাত নড়বড়ে
কেঁপেছিল প্রেমিকের তারপরে
প্রিয়া নিশিদিন চুম্বে মোর, স্পর্শায় অধরে।
দর্শি প্রিয়ার প্রিয়ের নিবিড় আলিঙ্গনে
নিঃসার্থ সেবার আনন্দ পেয়েছিনু মনে।
আজ তারা কে কোথায় ! আছে কত দুরে
জানি নাকো; তাদের প্রেম স্মৃতি রেখোছ বুকে ধরে।
রেললাইনে পাথর নেই, আর
নেই কোনো সিগন্যাল, নেই স্টেশন
নেই লাল পতাকা
নেই কোনো হুড়োগুড়ি, নেই হুইসেল
নেই রেল লাইন কিঙবা রেল নেই আজ।
নেই আর দিগন্ত মিশ্রিত কল্পিত নারীর মুখ
নেই মোনালিসা! নেই আফ্রোদিতি, নেই হাসি
নেই সেতারের ক্ষ্যাপা সুর,
নেই কোনো লজ্জা-নেই মান-অভিমান
নেই শরীরের বিন্দু রক্তের ব্যথিত গান।
এ শহরে সোডিয়াম বাতি আর নেই
নেই আলো-আঁধার, নেই দুষ্ট লোকের দল
ভুতুড়ে আলোয় অদ্ভুত সুন্দর কোনো সড়ক নেই
নেই প্রেম
সব কিছু উড়ে গ্যাছে
পশ্চিম থেকে পুবে
চলে গ্যাছে নোনাজলে বিলিয়ে দেয়া স্রোতে।
বিরহকে কেন্দ্র করে লিখেছেন কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ প্রমুখ। ভাষায় ও ছন্দে বিভিন্ন ভাবে তাঁরা নিয়ে এসেছেন মনের গভীরে প্রোথিত অনুভূতিকে।
অধিকাংশ বাঙালি কবিই সম্ভবত এক বা একাধিকবার প্রেমে পতন বা বিরহে কাতর হয়েছেন।রবীন্দ্রনাথ এর কথাই ধরা যাকনা কেন...প্রথম জীবনে কাদম্বরী দেবীর বিরহে কাতর না হলে হয়তো তিনি এতো সৃষ্টিশীল প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে কবিগুরু হয়ে উঠতেননা। আমার কথা কেন জানি বিশ্বাস করতে ইচ্ছা কছেনা, তাইনা? আগ্রহ থাকলে পত্রভারতীতে রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় -এর এ বিষয়ে সাক্ষাৎকারটি দেখুন।
কিংবা জীবনানন্দ দাস তার কবিতা "বনলতা সেন" এ যেভাবে বিরহের্ নিঃসঙ্গতা দেখিয়েছেন তা বাংলা সাহিত্যে অতুলনীয়। আসলে জীবনানন্দ দাশের কবিতা প্রথম জনপ্রিয় হয় তার 'বনলতা সেন” কাব্য-গ্রন্থটি প্রকাশিত হবার পর। তার আগে তার একাধিক বই বেরিয়েছিল, প্রেমের কবিতাও লিখেছেন যথেষ্ট । কিন্তু বনলতা সেন এক অভিনব স্বাদ নিয়ে এলো ৷ ইতিহাস-মহ্তুন-করা এক নারীর কাছে কবি চেয়েছিলেন মাত্র দু'দণ্ডের শান্তি।
বৈষ্ণব কবিতার ধারা ধরে রবীন্দ্র প্রণয়-গীথার যে সুর, তার আমূল পরিবর্তন হয় তিরিশের দশকে । আর বনলতা সেন কবিতাটিকেই ধরতে হয় এ দিক-বদলের চিহ্ন হিসেবে । এ প্রসঙ্গে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় -এর হৃদয় ছোয়া আবৃত্তি টি না উল্লেখ করেই পারছিনা।
তিরিশের দশকের প্রধান কবিরা সকলেই প্রেমের কবিতায় নিজস্বতা দেখিয়েছেন। তারপর থেকে আধুনিক কবিরাও সকলেই প্রেমের কবিতা রচনায় বিরহ প্রতিফলনের পরীক্ষা দিয়েছেন। অতি সাম্প্রতিক তরুণ কবিদের রচনায় আমরা তার কোনো অসফল প্রয়াস দেখতে পাই না। তেমনি কিছু কবিতা এখানে প্রকাশ করা হলো। আপনারাই যাচাই করুন এগুলোর স্বার্থকথা।
সুচেতনা
সুচেতনা, নয় তোমার কাছে কিছুই অজানা
তাহলে কেন দুরে সরে গেলে,
কেন তোমার হৃদয়ে আমার অস্তিত্বের
আগে প্রশ্নচিহ্ন রেখে দিলে ।
তুমিও তো আমায় ভালোবেসেছিলে -
সেকথা না বললেও আমি তো বুঝি ।
বুঝি তোমার মন কে, তোমার হৃদয়ের
প্রতিটি স্পন্দন-কে ।
তবে কেন সামনে এসে বললে না ?
কেন আগলে রাখলে বুক ফুটে মুখে আসা কথা কে,
কেন আমাকে জানতে দিলে না যে,
আমার জন্যেও কোন মন নি:শব্দে কাঁদে ।
কি অপরাধ করেছিলাম আমি ,
আর করলেই বা শাস্তি দিলে না কেন?
এগিয়ে এসে গালের ওপর সজোড়ে তোমার
হাতটা বসালে না কেন
একেই কি ভালবাসা বলে?
যার পতিক্ষা করতে করতে আমি আজ
বেদনাতুর হৃদয় নিয়ে সুখে বেঁচে আছি --
তুমি আসবে বলে ।......
সত্যিই কি তুমি আসবে?
আসবে কি আমার হৃদয়ের টুকরোগুলোকে
জোড়া লাগিয়ে নতুন স্পন্দন এনে দিতে ।
আসবে কি সব বাধা বিঘ্ন পেরিয়ে আমার
বক্ষমধ্যে!
আসবে কি তুমি , -- সুচেতনা ??
হয়ত তোমার জন্য
হয়ত তোমার জন্য
বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যায় , হোটেলের জানালায়
এলোমেলো দমকা হাওয়ায় অবিন্যত্ত চুল-
কিছু জানা কিছু অজানায় , কিছু নিষিদ্ধ তাড়নায়
আকাঙ্খিত পরিণতি(না?) জীবনের বৃহত্তম ভুল
বৈপ্লবিক সেই রাত্রির শেষে , কোঁচকানো বিছানার ক্যানভাসে
দুজনের সাথে চলার বুক ভরা আমন্ত্রণ -
পর্দা ঢাকা জানালায় আর হোটেলের দরজায়
ওৎ পেতে অসঃধ্য সম্মীকরণ
তোমার হৃদয়ের পাতায় আমার কবিতায়
সমস্ত সুলিখিত আগাম বার্তায়-
কোথাও ছিলো না তো হ্যায় ! পরিণতির কালো ছাই -----
নিয়তির ইচ্ছা সত্যি রোঝা দায় !
যা হওয়ার ছিলো হয়নি , যেভারে হওয়ার ছিলো তাও হয়নি
দুজনেই সরে গেছি আজ বহু দূরে;
শেষের পরেও একটি শুরু থাকে, আর সেটাও আমাদেরই হাতে
পারি নাকি আবার আসতে ফিরে?
নষ্টা
আমার স্বপ্নের নায়িকা
আজ হয়েছে নষ্টা
বেশ তো ছিলাম সর ভুলে ,
হঠাৎ করে স্বপ্নে এলে -
আজকের সবচেয়ে বড় সমস্য !
যতছিন ছিলাম সাথে দুজনাতে
সেন্ট্রাল পার্ক, নলবন, কিংবা ভিক্টোরিয়া -
দুজনের সমস্ত গোপন অভিসারে
বকে গেছি ঘন্টার পর ঘন্টা জুড়ে
তোমার ঠোঁট জুড়ে সতীত্ব আর আমার উঠতো ধোঁয়া ৷
তোমার বুকের উদ্ধত উষ্ণতায়
জ্বলতে চেয়েছি কতবার
মনের গোপন ইচ্ছেরা সব
লাশকাটা ঘরে নীরব, নিথর !
দাওনি অধিকার বিদায় বেলায় হাত টুকু ধরার !
তবুও তুমি-ই আমার স্বপ্নের নায়িকা ৷
গেছো চলে একলা ফেলে
হয়ত তোমার যোগ্য ছিলাম না আমি
কিন্তু পুরুষ ছিনাম , নেডাতে পারতাম প্রজ্জলিত বহ্নি !
কোনোদিনও কি একটা সুযোগও দিলে ?
শপিং মলে যাওয়ার আর রেস্তোরাঁয় খাওয়ার বিনিময়ে
অঙ্গ বস্ত্র একে একে গেছো খুলে --
আজ লোকে তোমায় ভাবে বাথরুমই
তোম্রার শরীরী বর্ণনা রাস্তার গুঞ্জনে
শরীর ও সন্মানটুকু বিকিয়ে কী পেলে?
অব্যক্ত ইচ্ছে
যে পথে চলেছি আমরা
সেটা কোথাও যায়না ৷
আমি তুমি ছেড়ে কেন মোরা , আমরা
তার কোনো জবাব হয়না
নিয়ম ভাঙ্গার এই খেলায়
নিয়ম বলেই তো কিছু নেই ,
আর কয়েকটা অব্যক্ত ইচ্ছের অপমৃত্যু ৷
ইচ্ছেগুলো গুমরে গুমরে কাঁদে, নিস্তব্ধ নিভৃত রাতে
তোমার সতীত্বের বদ্ধ আবরণে।
ভালোবাসা কিছু নয় , ভালোলাগাটাই সব --
তারই একটু চাই সুধু তব নয়নকোণে ৷
আমি ভালো আছি , বেশ ভালো আছি
সবাই যাও দেখে আমি খুব ডালো আছি ।
নিদ্রাতুর চোখে কোন কালে ভোরের আলো
আজ আর দেখিনা মিছি মিছি।
আর নেই আরব্য রজনীর দেশে গিয়েও উদাসী নয়ন
মনের কোণে কোনো এক বঙ্গললনার কপট অভিমান
শ্রীমতী থাক আর যাক , আজ খুশি শ্রীমান।
আজো রয়ে গেছে ভালবাসা
অতীতের অন্ধকার গর্ভেই তো জন্মায়
ভবিষ্যত আলোর দিশা ।
বিয়ের আগের আমার `বউ`টা
আজ শুধুই কেন দূরাশা ।
কত কোকিল ডাকা ভোরে, আলসে চোখে
সহস্র রঙিন পরিকল্পনা ।
মেলেছি দুজনে ডানা ।
আজো রয়ে গেছে ভাঙ্গাচোরা স্মৃতিতে;
নীড়ে ফেরা পাখির কলরবে, আর্দ্র আঁখি পল্লবে
আর ফেলে আসা পথের যতিতে।
“দারিদ্র যবে দুয়ারে আসি দাড়ায়, প্রেম তবে গবাক্ষ পথে পালায়”
এই তো ছিল অমিমাংশিত সমীকরণ ;
পর্যাপ্ত পার্থিব প্রাচুর্য্যের প্রয়াস ছিল না --- দিলেম স্বীকৃতি
বুকে ছিল বল , ভালবাসার আশ্রয়স্থল
চেয়েছি কি এমন নিষ্কৃতি !
সবাই যেদিন শুরু করে মোদের হল শেষ ;
রইল শুধু তপ্ত অশুজল ,
বিদায়ী শীতের কিছু অনাদায়ী উত্তাপের রেশ।
মৃত্যুপূর্বের একফোঁটা গঙ্গাজল।।
মরিচিকা
চারিদিকে ভাষা ভাষা চাহুনি
অবিশ্বাসে ভরা দৃষ্টি ,
প্রতি মুহূর্তে বিষছে ; রক্তাক্ত হৃদয়
একি অনাসৃষ্টি !
চওড়া হাসির আড়ালে লুক্কায়িত
বিষাক্ত শূদন্ত !
হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়বে
নীল শরীরে মুক্তি দুরাগত ।
অসহায় যন্ত্রনায় যার বুকে রেখেছে মাথা
ব্যক্ত হয়েছে অব্যক্ত দু:খ গাথা
ক্রুর হাসি অন্তরে তার , বাহিরে নিস্পাপ আর্দ্রতা.
তৃষ্ণার্ত চোখের অধরা মরিচিকা ।
ফেরার
বিদায়ের বেলায় অস্তরাগের. খেলায়
চোখের কোনে একান্ত গোপনে
তোমার আসা-যাওয়া...
সাথীহারা বিস্তৃত মুহূর্তে, যোজনবাপী দূরত্তে
শূন্য-এ বুকে আজও ঢেউ ওঠে,
হয়ত বলবে বেহায়া
জীবন নাট্যের শেষ অংকে দেহ মন অঙ্গ প্রত্যঙ্গে
রচিত সহস্র কবিতা নাকি প্রেমের ব্যর্থতা
রক্তের রং মেশে ওড়নায়।
পথ: যে অপসারী চলেছি দূরে দূরে সরি
অপ্রতিরোধ্য দূর্বারগতি পিছনে তাকালেই ক্ষতি
যদি বারেক ফিরে তাকাই!
আজো. আগে বসন্ত, অপেক্ষায় পলাশের বন
হয়েগেছে. একাকার কিংশুক... সূর্যাস্ত আর বুকচেরা রক্ত;
আলোকবর্ষ দূরে থেকেও হৃদে আছো আমরণ
মিশে গেছি আজ জনতায় খোঁজাটাই শক্ত ।
শুষ্ক গোলাপ
আজ আমি শুষ্ক পুষ্প এক
কেও ফিরে তাকাবেনা বারেক;
তবু হয়নি ব্যর্থ মোর জীবন
করিয়েছি চার চক্ষুৰ মিলন
হিয়ায় হিয় রাখি হাতে রাখি হাত,
চলার পথে প্রেরণা দিয়াছি কাছে দুরে যেখানেই থাক।
হয়তো শুষ্ক গোলাপ বইয়ের ভেতর পরে
প্রেমিকার হাতে তুলে দিতে হাত নড়বড়ে
কেঁপেছিল প্রেমিকের তারপরে
প্রিয়া নিশিদিন চুম্বে মোর, স্পর্শায় অধরে।
দর্শি প্রিয়ার প্রিয়ের নিবিড় আলিঙ্গনে
নিঃসার্থ সেবার আনন্দ পেয়েছিনু মনে।
আজ তারা কে কোথায় ! আছে কত দুরে
জানি নাকো; তাদের প্রেম স্মৃতি রেখোছ বুকে ধরে।
পশ্চিম থেকে পুবে
নেই কোনো সিগন্যাল, নেই স্টেশন
নেই লাল পতাকা
নেই কোনো হুড়োগুড়ি, নেই হুইসেল
নেই রেল লাইন কিঙবা রেল নেই আজ।
নেই আর দিগন্ত মিশ্রিত কল্পিত নারীর মুখ
নেই মোনালিসা! নেই আফ্রোদিতি, নেই হাসি
নেই সেতারের ক্ষ্যাপা সুর,
নেই কোনো লজ্জা-নেই মান-অভিমান
নেই শরীরের বিন্দু রক্তের ব্যথিত গান।
এ শহরে সোডিয়াম বাতি আর নেই
নেই আলো-আঁধার, নেই দুষ্ট লোকের দল
ভুতুড়ে আলোয় অদ্ভুত সুন্দর কোনো সড়ক নেই
নেই প্রেম
সব কিছু উড়ে গ্যাছে
পশ্চিম থেকে পুবে
চলে গ্যাছে নোনাজলে বিলিয়ে দেয়া স্রোতে।
কেমন লাগলো? পরিশিষ্টে বলতে চাই, বাংলা ভাষায় প্রতি নিয়তই নতুন কবিরা আসছেন। এই ক্ষুদ্র সংকলন দিয়ে আমাদের সাহিত্যের বৃহৎ ভান্ডারকে ছোট করে দেখতে চাইনা। তাই, ভবিষ্যতে আরো ভালোভাসার কবিতা আপনাদের জন্য উপস্থাপন করার প্রত্যয় রইলো।
খুব সুন্দর।
ReplyDelete